
ভোরটা ঘন কুয়াশায় ভরা চারদিক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। এই সময় মানুষ খুব আরামের ঘুম দেয় কম্বল মুড়িয়ে। শীতকালের ঘুম কেউ ডাকলে সহজে ওঠে না কেউ। কারও জরুরী কাজ থাকলে সে বেচারা অনেক কষ্ট করে ওঠে। যারা নামাজের জন্য ওঠে তাদের যদি কোন কাজ না থাকে তারাও নামাজ পড়ে এই আরামের ঘুমকে অবহেলা করে না। কিন্তু এই দিনটা অন্যরকম, বাইরে ঘন কুয়াশা শীতে মানুষের কাপানি তবুও প্রত্যেকে শীতকে উপেক্ষা করছে। অন্যদিন যাকে ঘুম ভাঙা সত্ত্বেও শোয়া থেকে তোলা যেত না সেও টপাস করে ওঠে গেল, তাড়াতাড়ি নিজেকে তৈয়ার করে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ল। দিনটা ১০ই মাঘ। এই দিনটাতে হযরত কেবলা ( সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী) আমাদের কাছ থেকে পর্দা করেছিলেন। তাই তার ওরস মোবারকে ছুটছে সবাই। প্রত্যেকদিন শীতের কাছে হার মানলেও এই দিনে শীত হার মানে। ভক্ত আশেকরা ছুটে যায় মাইজভান্ডার দরবার শরীফে। লক্ষ লক্ষ আশেকদের মিলন মেলায় পরিণত হয় ১০ই মাঘ এই মাইজভান্ডারে। চারদিক মানুষে পরিপূর্ণ, কেউ জিয়ারত করে আসছে কেউ করতে যাচ্ছে সেই ভোর থেকে শুরু করে সারারাত সেখানে আশেকের ঢল।সেখানে ওরস উপলক্ষ বিলের মাঝে গ্রাম্য মেলা বসে। যারা যিয়ারত করতে যায় তারা মেলায়ও ঘুরে, সেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যায় বলে মানুষের বেশ উপকার হয়। তারা সেখান থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে থাকে। যখন মাজারে যিয়ারতে গেলাম মাজারের ভেতর মানুষের ভিড়। সেখানে মানুষের চাওয়ার শেষ নেই। যে যার যার আর্জি মন খুলে বলছে। আল্লাহর অলিদের কাছে চাওয়াতে অনেকের বাঁধে। অনেকে শিরকও বলে থাকে। কিন্তু কেউ যদি আল্লাহর প্রতি এইরকম বিশ্বাস রাখে যে আল্লাহ তার অলীকে দিয়েছেন তাই আমি তার কাছে চাইলে পাব। এই বিশ্বাস রেখে কেউ চাইলে সেটা শিরক হবে না। কেননা আল্লাহ তার অলীদের যে আলোকিক শক্তি প্রদান করেন এবং তারা চাইলে কাউকে সাহায্য করতে পারেন সেটা মহান আল্লাহ তার কোরআন শরীফে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন। তাই যারা তাদের কাছে চাওয়াকে শিরক বলে তাদের এই কথা প্রযোজ্য নয়। কেননা সকল মুসলিমই বিশ্বাস করে যে অলীদের কাছে কিছু চাইলে আল্লাহর অলীরা সেটা মূলত আল্লাহর কাছ থেকেই এনে দেন। মাইজভান্ডার এমন একটা দরবার যেখানে খাঁটি আশেকরা কখনো খালি হাতে ফেরে না। তাইতো কেউ একটু মাজারের ভেতর প্রবেশ করতে পারলে সহজে বের হতে চাইনা। মনের সকল আর্জি মন খুলে বলে থাকে। এই আশেকদের মিলন মেলা দেখে মন প্রাণ যেন এক অন্যরকম উল্লাসে মেতে উঠে। যেখানে শীতকে কাবু করতে যুবকদের হাবুডুবু খেতে হয় সেখানে শিশু বৃদ্ধ সকলের কাছে শীত পরাজিত হয়। আশেকদের এই মিলন মেলা দেখে মনে হয় আজ শুধু আশেকরা নয় আকাশ বাতাস এতে খুশিতে আত্মাহারা।
1 Comments
Wow masahallah wonderful
ReplyDelete