হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) জন্মগ্রহণ করেন ৫৭৩ খৃষ্টাব্দে।তিনি ছোটবেলা থেকে অত্যন্ত সুচরিত্রের অধিকারী ছিলেন। ইসলাম প্রচারের পর থেকে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন প্রত্যেকে ইসলাম গ্রহণ করার আগে অনেক দেব-দেবীর পূজা করত, তখন প্রকাশ্যে সবাই মদ পান কারত, কোনো নিষেধ ছিল না। কিন্তু সিদ্দিকে আকবর ছোটবেলা থেকেই এসব থেকে বিরত ছিলেন।
মহান রাব্বুল আলামিন তাকে মদ পান, দেব-দেবীর পূজা থেকে তাকে বিরত রেখেছিলেন। একদিন হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এর পিতা তাকে নিয়ে ঘর থেকে বের হলেন। তার পিতা তাকে একটা বড় মূর্তির সামনে নিয়ে গিয়ে বললেন, এই আবু বকর এটা তোমার বড় খোদা, তুমি একে সিজদা কর বলে তিনি বাইরে গেলেন সিদ্দিকে আকবরকে রেখে। তখন সিদ্দিকে আকবর কিছু চিন্তা করলেন এরপর মূর্তিকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তুমি যদি আমার খোদা হও তাইলে আমার ক্ষুধা পাইছে আমাকে খাবার দাও! তিনি কিছুক্ষণ দেখলেন কিন্তু কোন খাবার দিল না। এরপর বললেন আচ্ছা আমার কোন ভালো কাপড় নাই, সব কাপড় ছিড়া আমাকে পরিধান করার জন্য কাপড় দাও! তিনি দেখলেন তাকে খাবার দিল না, কাপড়ও দিল না, তাই তিনি রাগান্বিত হয়ে বললেন, আমাকে কিছু দিতে হবে না। তুমি যদি আমার খোদা হয়ে থাক তাহলে তুমি আমার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা কর বলে তিনি একটা পাথর নিয়ে ছুড়ে মারলেন। সাথে সাথে মূর্তিটা ভেঙে পড়ে গেল।
তখন হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) পিতা এসে দেখলেন তার ছেলে মূর্তি ভেঙে দিয়েছে। তাই তাড়াতাড়ি তাকে ঘরে নিয়ে গেল এবং তার মাকে বলল তোমার ছেলে আজ কি করেছে জান? সে বড় মূর্তিটাকে পাথর মেরে ভেঙে দিয়েছে। হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এর মা বললেন, আপনি আমার ছেলেকে কোন কিছু বলবেন না। তার জন্মের সময় উপর থেকে এক গায়েবি আওয়াজ এসেছিল আর বলছিল তুমি এক পবিত্র সন্তান জন্ম দিয়েছ। যে আখেরী নবীর সঙ্গী হবে এবং যার নাম আসমানে রাখা হয়েছে সিদ্দিক।
তাছাড়া সেসময় মানুষ যেভাবে মদ পান করত তখন তা খুব সহজেও পাওয়া যেত। তারপরও সিদ্দিকে আকবর কখনো মদ পান করেননি। সেই বাল্যকাল থেকে তিনি যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে বিরত ছিলেন। সিদ্দিক ছাড়াও তার আরেকটি উপাধি ছিল। সেটা হল আতিক। আতিক অর্থ হল স্বাধীন। তিনি সারা জীবন প্রিয় (দ.) এর প্রেমে নিজের সবকিছু বিসর্জন দিয়েছেন। তার সেই ছোটবেলা হতে নিয়ে প্রিয় নবীর ( দ) সঙ্গী থাকা আর কিভাবে প্রিয় নবীর (দ.) প্রতি ভালোবাসা আর তার শাসন আমল পর্যন্ত আমাদের তিনি শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আজ তার শিক্ষা আমরা জীবনে গ্রহণ করতে না পারার কারণে আমরা বিপদগ্রস্ত। আমাদের তার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে, সে অনুযায়ী চলতে পারলে জীবন সার্থক হবে।
0 Comments