Advertisement

Responsive Advertisement

কাজী নজরুল ইসলাম, এক আশেকের গল্প

আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম । আমরা যখন তার জীবন বা ইতিহাস দেখি, তখন আমরা দেখতে পাই তার জীবনে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে।তিনি লেখা-পড়া ও তেমন করতে পারেননি।মেট্টিক পাশের পর তার পড়াশোনা আর গড়ায়নি। মসজিদের মুয়াজ্জিন কিংবা বিভিন্ন পেশায় যোগদানের মধ্য দিয়ে গড়ায় তার বাল্যকাল।কিন্তু তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকা সত্ত্বেও লিখনিতে দেখিয়েছেন তার প্রতিভা। যাকে বিদ্রোহী কবি হিসেবে আমরা জানি, যার লেখা আজ আমরা পড়ি ছাত্র জীবনে কিংবা অবসর সময়ে। তার ত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই বেশিদূর!তারপর তিনি অসীম জ্ঞানের অধিকারী কিভাবে হলেন? আল্লামা জালাল উদ্দিন রুমি (র.)যিনি বিখ্যাত ইসলামের এক কবি, যিনি    বলেছিলেন কুরআনকে এত বেশি জেনেছেন যে, আমরা যেমন মুরগির মাংস খাওয়ার পর হাড়গুলো রেখে দিই  তেমনি তিনি কুরআনের সমস্তকিছু  খেয়ে হাড়গুলো রেখেছেন  বলেছিলেন সেই  রুমি বলছেন তোমরা জ্ঞানী ব্যক্তির সান্নিধ্যে থাক তাতে তোমাদের জ্ঞান ও খুলে যাবে। তাদের দ্বারা তোমরাও আলোকিত হতে পারবে। ঠিক তেমনই আমাদের জাতীয় কবি জ্ঞানীদের সান্নিধ্য পেয়েছিল, শুধু তা নয় তিনি কাজেও লাগিয়েছেন। যার ফলে আমরা তার খ্যাতি দেখতে পাই।মানুষে মানুষে প্রেম মোহাব্বত মানুষকে সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে যায়।আমরা তার দুটি বৈশিষ্ট্য বেশি দেখতে পাই, যার একটি হল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ,যার কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি হিসেবে আমরা জানি। আর অপরটি হল ইসকে মোহাব্বত। যে মোহাব্বত তাকে আজ সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে দিয়েছে। যেই মোহাব্বত ছিল আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) এর উপর। যার প্রমাণ আমরা তার নাতের মধ্যে দেখে থাকি।তিনি আজানকে কত ভালোবাসতেন, যে আজান হযরত বেলাল সর্বপ্রথম দিয়েছিলেন তার সুমধুর কন্ঠে  ।তিনি লিখেছেন,
মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই,
যেন আমি কবর হতে মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই
এই আজানকে তিনি কতইনা ভালোবাসতেন।যারা এই আজানকে ভালোবাসে তারা ত তাকে আরও বেশি ভালোবাসে, যিনি আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে আমাদের জন্য নিয়ে এসেছেন। তাতে সফলতা অর্জনে বিন্দু মাত্র এদিক ওদিক হতে দেখিনি নজরুলকে। তিনি নিজে আশেক ছিলেন সাথে আমরাও যেন ভুল পথে পা না দিই, সেজন্য তিনি লিখেও গেছেন। তার এই অসীম জ্ঞান আমরা আজ প্রতিনিয়ত দেখছি পড়ছি আর মুগ্ধ হয়ে তারই গুনগান করছি।তিনি লিখেছেন,
               
আমি যদি আরব হতাম, মদিনারই পথ
যে পথে হেটে যেতেন নূর নবী হযরত।

তিনি  বলছেন সৃষ্টিকর্তা যদি আমায় মানুষ না বানিয়ে যদি মদিনার রাস্তা বানিয়ে পাঠাত তাহলে আমি নিজেকে আরও বেশি ধন্য মনে করতাম। কেননা ঐ রাস্তা দিয়ে ত আমার প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়াসাল্লাম)  হেটে যেতেন। তার পায়ের ধূলি থাকত আমার কাছে। কেননা এই ধূলিও  পৃথিবীর সবচেয়ে দামী মূল্যবান হীরার চেয়েও হাজার কোটিগুণ বেশি দামী। কত বড় আশেকে রাসূল হলে এইরকম নাত লিখতে পারে। তিনি রাসূলের  গুণগান করেছিল বলে আমরা আজ তার শত শত নাতে রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা)  দেখতে পাই। জ্ঞানী হওয়ার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা যথেষ্ট নয়, বরং জ্ঞানীদের পরশের ছোঁয়াও প্রয়োজন। তা আমাদের জাতীয় কবি প্রমাণ করে দিয়েছেন। জীবন মানেই সংগ্রাম। হয়ত এতে কেউ জয়ী হয় কেউ অলসের গোরে বন্দি। তুমি মোহাব্বতের আলো তোমার ভেতর জ্বালিয়ে দাও কেননা এটি তোমাকে ভ্রান্ত পথ হতে দূরে রাখবে আর যার ভেতর রাসুলুল্লাহর প্রেম রয়েছে সে কখনও ভুল পথে পা রাখবে না যদি তা মোহাব্বতের  মত মোহাব্বত হয়।কারণ বর্তমানে আমরা নজরুলর  মত সেই মোহাব্বত দেখতে পাই না। সব যেন কালো ছায়ায় ঢেকে গেছে। কাজী নজরুল ইসলামের জীবনে সেই  বাল্যকাল থেকে কঠিন পরিস্থিতি থাকার পরও অন্যায় পথে পা রাখেনি, বরং লড়ে গেছেন জীবন সংগ্রামে। সাথে ছিল রাসূলের প্রেম। আমরা তার লেখায় বুঝতে পারি তিনি কঠিন পরিস্থিতিতেও  বিদ্রোহ করে গিয়েছিলেন। কবর হাশরের কথা স্মরণ করতেন বলে ভ্রান্ত পথ তাকে ছুতে পারেনি। সঙ্গ দোষে যেমন লোহা ভাসে, প্রভাতটি আমরা জানি । জালাল উদ্দিন রুমি বলছেন, গোলাপের পরশেও  অন্য ফুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়। কিন্তু আমরা আগের সেই চিত্র এখন দেখি  না,প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এখন অর্থ কেন্দ্রীক। সবাই ভলো উপার্জনের  জন্য শিক্ষা অর্জন করে। কেউ জানার জন্য  আজ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেয় না। কথায় আছে গোবরেও পদ্ম ফুল ফোটে। যে জ্ঞান অর্জন করতে চাই সে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াও জ্ঞানী হতে পারে আর যে অর্থের পেছনে ছোটে সে বড় বড় ডিগ্রি নেওয়ার পরও জ্ঞানী হতে পারে না। তার ভেতর  ইসকে মোহাব্বত লুপ পায়। ফলে সে শিক্ষিত নামে হলেও  তার ভেতর জ্ঞানের আলো জ্বলে নি। তাইতো আমাদের জাতীয় কবি প্রমাণ করে দিলেন জ্ঞানের সর্বোচ্চ স্তরে সে'ই উঠতে পারে যার ভেতর ইলমের সাথে মোহাব্বত হয়ে যায়। তোমার ভেতরের আলো যদি  তুমি জ্বালাতে না পারো হাজার ডিগ্রিও তোমাকে জ্ঞানের সুউচ্চ স্তরে প্রবেশ করতে পারবে না।                                                                                                                                                                                   

Post a Comment

1 Comments