Advertisement

Responsive Advertisement

সমালোচনা

আমরা প্রতিনিয়ত কতই না প্রয়োজনীয় কিংবা অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলে থাকি। কোনো সময় কথার ফাঁকে আমরা একে অন্যের সমালোচনা করে থাকি বুঝে কিংবা না বুঝে, ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছায়। আবার আমাদের মাঝে এমন লোকও দেখা যায় কেউ ভাল কাজ  করলে সে তা সহ্য করতে পারে না, ফলে সে তার সমালোচনায় লিপ্ত হয়। আবার দেখা যায় খারাপ কাজ করলেও  তার মন্দ বলে। প্রতিটা স্থানেই এমন লোক পাওয়া যায়। ফলে কেউ ভালো কাজ করতে চাইলে তাকে নিরুৎসাহিত করে দেয়। এই সমালোচনা একটি জঘন্য কাজ। এরপরও দেখা যায় মানুষ কয়েকজন মিলে কথা বললে সেখানে মানুষের সমালোচনা হয়ে যায়। আমরা সকলেই জানি হাসান বসরী (রা.) একজন বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন। তার সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে ছিল। প্রত্যেক মানুষ তার প্রশংসা করত। একদিন একজন লোক হাসান বছরী (রা)  এর কাছে এসে বলল, হুজুর অমুক ব্যক্তি আপনার সমালোচনা করছে। যার প্রশংসা চারদিক তারও সমালোচনার মানুষ আছে। অথচ তিনি একজন উচু স্তরের বুজুর্গ, যাদেরকে মহান আল্লাহ এত বেশি ভালোবাসেন যে আসমানে ফেরেস্তাদেরকেও আল্লাহ ভালোবাসার জন্য বলেন তারও সমালোচনা করছে। ঐ ব্যক্তির কথা শুনে হাসান বসরী (রা.) তাকে বললেন, তুমি বাজারে যাও। বাজারের মধ্যে যেই দোকানে সবচেয়ে ভালো খেজুর রয়েছে সেই দোকান থেকে কিছু ভালো খেজুর কিনে তাকে দিয়ে এসো। হাসান বসরী (রা.)  এর এমন কথা শুনে লোকটি বড়ই আশ্চর্য হয়ে গেল। সে  ভাবলো হয়ত তিনি তাকে ধরে আনার কথা বলবে নইতো গালি দিবেন কিন্তু এমন কথা তাকে হতবম্ব করে দিল। সে জিজ্ঞেস করল, হুজুর সে আপনার  সমালোচনা করল আর আপনি তাকে বাজারের সবচেয়ে ভালো খেজুর কিনে দিতে বলছেন?  তখন হাসান বসরী (রা.) বললেন, সে আমার সমালোচনা করছে না বরং সে আমার পাপ সমূহকে তার কাছে নিয়ে যাচ্ছে। সে বিনা কারণে আমার পাপগুলো নিয়ে আমাকে পাপ মুক্ত করছে এ আমার জন্য খুশির সংবাদ। তাই তাকে পরকালে সাহায্য করতে পারি না পারি দুনিয়াতে হলেও তার উপকার করছি আরকি। সমালোচনা যে কত বড় খারাপ জিনিস তা আমরা হাসান বসরী (রা.)  থেকে বুঝতে পারি। হয়ত বা কারও সমালোচনা করে আপনি আপনার রাগ ঝারছেন কিন্তু তা কতই না ক্ষতিকর। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত সমালোচনাকে পরিহার করা। যদি কখনো মানুষের উপকার করতে মন না চাই কিংবা না করেন কখনো ক্ষতি যেন আমরা না করি। অন্যের  সমালোচনা করার আগে নিজে কি করছি তা একবার আমাদের ভাবা উচিত। তৈয়ব শাহ (র.) বলেছেন, তোমরা কখনো কাউকে আঙুল দেখিওনা, কেননা তুমি হয়ত একজনকে তোমার একটা আঙুল দিয়ে তার ভুলকে দেখাচ্ছ কিন্ত তোমার  তিন আঙুল সাক্ষ্য দিচ্ছে তুমিই আসল অপরাধী। তাই সবসময় কারও দোষ না খুজে গুণ খুজা উচিত। কিন্তু আজ আমাদের সমাজ এমন হয়ে দাড়িয়েছে যে কারও সামান্য ভুল পেলে তা সবার সামনে বড় করে তুলে ধরি। অথচ নিজের ভুল স্বীকার করতে রাজি না। পথে -ঘাটে এমন হয়ে গেছে মানুষের সমালোচনা ছাড়া কথা হয় না। আমরা নিজেরা যদি না সুধরাই তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আর বেশি এই পথে ধাবিত হবে।আমাদের এই সমালোচনার হাত হতে রক্ষার জন্য অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা কমাতে হবে এমন বিষয় নিয়ে কথা বলবো যাতে অন্যের ক্ষতি না হয়। সমালোচনা কত খারাপ তা আমরা হাসান বসরী (রা.) থেকে জানতে পারি। তাই এটি পরিহার করা অত্যাবশ্যকীয়।                                                                                                                                         

Post a Comment

0 Comments